সমর্পণ
-মানিক দাক্ষিত
আমাকে নিয়ে সংসারে চরম অশান্তি। অশান্তির মূল কারণ ওর আর আমার সম্পর্ককে ঘিরে। মনে হচ্ছে সম্পর্কটাকে আর টিকিয়ে রাখা যাবে না। ইতি টানতে হবে। কিন্তু কিভাবে ইতি টানবো? ওর সাথে সম্পর্ক যে আমার বহুদিনের। ওকে ছাড়া যে আমি বাঁচতে পারবো না। উঠতে বসতে বাবার ধমক – “সামনে জয়েন্ট পরীক্ষা। ভালো চাওতো ওর সঙ্গ ছাড়ো। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোও। লক্ষ্যে পৌঁছাও।”
অনেকবার চেষ্টা করেছি ওকে ছেড়ে একা থাকার। কিন্তু পারিনি। ওর দূর্নিবার আকর্ষণ আমাকে পাগল, মাতোয়ারা করে তোলে। আমাকে নিয়ে বাবা-মায়ের গভীর প্রত্যাশা। ওরা যা হতে পারেনি, আমাকে দিয়ে সেই ইচ্ছেটাকেই পূরণ করতে চায়। মস্ত বড় ডাক্তার। আর সেটা একমাত্র সম্ভব ওর সঙ্গ ত্যাগ করে কঠোরভাবে পড়াশুনোয় মনোনিবেশে।
গতরাতে মায়ের সাথে বাবার তুমুল ঝগড়া বেধেছিল। আমাকে কেন্দ্র করেই। রাগের চোটে দেয়ালে কপাল ঠুকে মা রক্তারক্তি করেছে। রাতে জলটুকু স্পর্শ করেনি।
সকালে উঠে অপরাধীর ন্যায় মায়ের কাছে মাথা নীচু করে দাঁড়াই। আমাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠে মা। আমার ডানহাতটাকে নিয়ে নিজের মাথায় স্পর্শ করে বলে, “ওর সঙ্গ না ছাড়লে আমার মাথার দিব্যি তুই আমার…” মুখটা চেপে ধরি মায়ের।
-ও-কথা মুখে এনো না মা। তোমাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। কথা দিলাম। আজ থেকেই ওর সঙ্গ ছাড়বো।
জিনসের সামনের পকেট থেকে আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী স্মার্ট ফোনটা তুলে দিলাম মায়ের হাতে।
আন্তরিক ধন্যবাদ আমার প্রিয় সাহিত্য পরিবারকে।
অশেষ শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।